Tag: Robichakro
স্বেচ্ছাচার কবলিত রবীন্দ্রসঙ্গীত
নিজের গান সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘এই পার্থিব জীবন ও পৃথিবীর মানুষকে আমি ভালোবেসেছি। এই ভালোবাসা রেখে গেলাম আমার গানের সুরে গেঁথে। মানুষ যদি মনে রাখে, তবে এই গান দিয়েই রাখবে।’ কবির প্রয়াণের পর চুরাশিটি শ্রাবণ অতিক্রান্ত। ইতিমধ্যে বাংলার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির জগতে ঘটে গেছে আমূল পরিবর্তন, অনেক ভাঙচুর, অনেক পুনর্নির্মাণ। আধুনিক ভাবনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে…
বিদ্রোহ ও ভালোবাসার কবি নজরুল
নজরুল-কাব্যের আসল কথা হল বিদ্রোহ বা লড়াই। দ্বিতীয়, ভালোবাসা। বিংশ শতাব্দীর তরুণদের মধ্যে তিনিই হচ্ছেন প্রথম কবি, বরীন্দ্রনাথের যশোমন্ডলের মধ্যে থেকেও যিনি খুঁজে পেয়েছেন স্বকীয় রচনাভঙ্গি এবং দৃষ্টিভঙ্গি। ধূমকেতুর মতই তাঁর আবির্ভাব। সাহিত্য সঙ্গীতের ক্ষেত্রে তিনি যেন কালবৈশাখীর ঝড়। প্রথম মহাযুদ্ধে নজরুল ইউনিফর্ম পরে সৈনিকের ব্রত গ্রহণ করেছিলেন পরে ইউনিফর্ম খুলে ফেললেও সৈনিকের ব্রত নিয়েই…
ব্যোমকেশ-স্রষ্টা শরদিন্দু
বাংলা চলচ্চিত্রে ইদানীং ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে ছবি নির্মাণ করার আগ্রহ বেড়েছে। হবেই তো! ব্যোমকেশ বক্সী মানেই টানটান রহস্য এবং রোমাঞ্চ। বাঙালি আজ নতুন করে যেন ব্যোমকেশের প্রেমে পড়েছে। কিন্তু ব্যোমকেশের যিনি স্রষ্টা, তাঁকে আমরা কতটা চিনি। একদিন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে সৃষ্টি হয়েছিল ব্যোমকেশ এবং তার সঙ্গী অজিত। অনেকটা শার্লক হোমস এবং ওয়াটসনের আদলেই আমরা তাদের…
বাঙালির জীবনচর্চায় ‘উদরবিভাগ’-এর উজ্জ্বল উপস্থিতি
খুব প্রাচীন কালের বাঙালির খাদ্যাভাস কেমন ছিল তা নিয়ে কোনো সুসংবদ্ধ নথি পাওয়া না গেলেও এটা বোঝা যায় ভাত খাওয়াটা অস্ট্রিক ভাষাভাষী আর আদি-অস্ট্রেলীয় মূল জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি থেকেই প্রবাহিত হয়েছে বাঙালির মধ্যে। অস্ট্রিকরাই এ দেশে প্রথম চাষ-বাসের প্রচলন করেছিল। সেটা প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগের কথা। আর্যরা চাষবাস করতে জানত না। তারা মূলত পশুপালক ছিল।…
বিলাসীর বিলাস
আনন্দময়ী মায়ের থানে, বুকের আঁচলটাকে বেশ করে বিছিয়ে নিয়ে দুই মেয়েকে কোলের ভাগে বাগিয়ে নিয়ে শুয়েছিল বিলাসী। অকালবিধবা বিলাসী এই সবে তার স্বামীটাকে খেয়েছে। না মানে গ্রামের খুড়ি কাকীরা তাই বলেছে ওকে। সে যাই হোক, বিলাসী জানে সত্যিটা। যেদিন ওর ওই তিন বছরে বিয়া করা স্বামী ট্রাকের সঙ্গে সাইকেলের ধাক্কায়, হঠাৎ মারা গেলো, সেদিন বিলাসী…
বিলু শকুন
বোসদের পুরানো আমলের বাড়ি। বাড়ি না বলে প্রাসাদ বলা চলে। এখন তার ভগ্নদশা। সদর দরজার লম্বা কাঠের পাল্লা একদিকে খসে পড়েছে বহুকাল। অন্যদিকে একটা ছোট কোলাসিবল গেট দেওয়া হয়েছে। বাড়ির ফটকটাই একটা ঘরের মতো, রাস্তার দিকে প্রায় বিশফুট আর ভিতর মহলেও তিরিশ ফুট মতো লম্বা। ডানে বাঁয়ে বৈঠকখানা আছে। ওপরে বাহারি ছাদ। ভিতর মহলের দিকেও…
বন্দরের কাল হল শেষ
বিদ্যালয়গুলি,সম্মানিত জ্ঞানবৃদ্ধের মতো,পলিত কেশ, লোল চর্ম,দৃষ্টি অস্বচ্ছ, স্মৃতিও তথৈবচ, অথচ,তাদের সামনে গেলেইঅজান্তেই মাথাটা নুয়ে আসে।ঘরের দেওয়ালগুলো লোনাধরাসেখান থেকে জল গড়িয়ে নামে, যার স্বাদশিশুর কান্নার মতো নোনতা। ব্ল্যাকবোর্ডগুলো যারা ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলত,ঘোড়ারা এসে খেয়ে গেছে তাদের,চকগুলো টেবিলে,যেন কবরে শুয়ে থাকা শব্দহীন হাড়,ধরার হাতগুলো ঘোড়াদের ক্ষুরে ছিন্নভিন্ন ;নৈরাশ্য, নৈরাশ্যের কালো সুড়ঙ্গের মধ্যেতলিয়ে যাচ্ছে শিশিক্ষু মুখগুলি,ক্লাসরুমে বসে…
ক্ষণিকম ক্ষণিকম সর্বং ক্ষণিকম!
দেশভাগ এক নির্মম সত্য। এই সত্যকে মানিয়া লইয়া ভারতীয়রা নিজনিজ অস্তিত্বকে পুনর্গঠন করিয়া উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের পথে আগুয়ান। তন্মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধির ন্যায় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি হানা দিয়া দেশের সুস্থিতি চূর্ণ করিয়া দিতেছে। সেই শক্তিকে নিয়মিত ইন্ধন যোগাইতে প্রস্তুত বিভাজিত অপর অংশটি। তাহাদের মনে শত্রুতা ভিন্ন বিকল্প কোন ভাবনা বিকশিত হইতে পারে নাই। পুরাতনকে বিগত ভাবিতে তারা অপারগ।…