Tag: Bengali Literature
ক্ষণিকম ক্ষণিকম সর্বং ক্ষণিকম!
দেশভাগ এক নির্মম সত্য। এই সত্যকে মানিয়া লইয়া ভারতীয়রা নিজনিজ অস্তিত্বকে পুনর্গঠন করিয়া উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের পথে আগুয়ান। তন্মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধির ন্যায় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি হানা দিয়া দেশের সুস্থিতি চূর্ণ করিয়া দিতেছে। সেই শক্তিকে নিয়মিত ইন্ধন যোগাইতে প্রস্তুত বিভাজিত অপর অংশটি। তাহাদের মনে শত্রুতা ভিন্ন বিকল্প কোন ভাবনা বিকশিত হইতে পারে নাই। পুরাতনকে বিগত ভাবিতে তারা অপারগ।…
“যে-দিন উদিলে তুমি বিশ্বকবি”: রবীন্দ্রনাথের শেক্সপিয়র
ইংরেজি শিক্ষাকে বাহন করে আধুনিক মননে আলোকিত বাঙালির জীবনে শেক্সপিয়র যে আজও অনেকটা প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের মতোই ঢুকে পড়েন, সেটা আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই জানি। কিন্তু এই ‘অনুপ্রবেশ’ একটি বাঙালি ছাত্রের শৈশবের কোন্ পর্যায়ে ঘটতে পারে ও তা কতটা গভীরবিস্তারী হতে পারে, তার একটি ধারণা পাওয়া যাবে এই তথ্যটি থেকে যে, উনিশ শতকে কলকাতার এক ন’…
রবীন্দ্রনাথের গান ও সত্যজিৎ রায় – কিছু কথা
অতি সম্প্রতি ‘রবিচক্র’-এর আন্তর্জালিক পত্রিকার পাতায় শ্রীমতী পূর্ণা মুখোপাধ্যায়ের সুলিখিত প্রবন্ধ ‘সত্যজিতের মননে রবীন্দ্রনাথ’ পড়ে কিছু মন্তব্য করতে বসে দেখছি তার আকার একটা স্বতন্ত্র লেখার দাবি করছে। কারণ সত্যজিৎ রায়ের সংগীত-ভাবনা সম্পর্কে তাঁর বলা আর অনেক না-বলা কথাও আমার ভাবনায় উঠে আসছে। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে দু-চার কথা বলতে এই পোস্টের অবতারণা। সংগীত সম্পর্কে আদৌ…
আমার ‘বনফুল’ সন্দর্শন
বিস্মৃতিচারণা (১৪) সচেতন তারুণ্যে আমার প্রথম বাংলা সাহিত্যের বনস্পতি সন্দর্শন যাঁর সঙ্গে, তিনি ডাক্তার বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, ওরফে বনফুল। আমার এই ক্ষুদ্র অতীতচারণার মুখবন্ধে বনফুল প্রসঙ্গে ভাষাতাত্ত্বিক আচার্য সুকুমার সেনের ‘বনফুলের ফুলবন’ গ্রন্থটি থেকে তাঁর দুটি উক্তি স্মরণ করতে ইচ্ছে করছে। তিনি বলেছিলেনঃ “তাঁর সাহিত্য সৃষ্টিতে ’ফুল’ আছে, ‘বন’ অর্থাৎ উপবন – ফলপ্রসু ও ছায়াবৃক্ষও আছে।…
তব জয়সঙ্গীত ধ্বনিছে
রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে অন্যান্য সংগীতের প্রধান পার্থক্য রবীন্দ্রনাথ গান লিখেছিলেন মহাকবির কলম হাতে নিয়ে। পৃথিবীতে এমন কোনো মহাকবি নেই যিনি সংগীত সৃষ্টির ক্ষেত্রে, কী পরিমাণে, কী বৈচিত্র্যে, কী উৎকর্ষের বিচারে রবীন্দ্রনাথের ধারে কাছেও আসতে পারেন। সংগীত, যা ভাষা ও সুরের মেলবন্ধনে সৃষ্ট একটা তৃতীয় শিল্পমাধ্যম, যার ব্যাকরণ এবং আঙ্গিক একেবারেই স্বতন্ত্র : এর সার্থক রূপায়ণ এবং…
হন্যমান স্বদেশ ও একজন কবি
ঊনিশশো পঁচাত্তর সালে প্রথম হরমন্দির সাহিব পরিসরের একপাশে প্রায় লুকিয়ে থাকা জালিয়াঁওয়ালাবাগের ভাঙাচোরা গলিতে পা রেখেছিলুম। ভিতরে কোটা’র লালপাথরের অমরজ্যোতি ছাড়া আর কোনও নির্মাণ ছিলো না। সামান্য কেয়ারি করা কিছু তৃণভূমি, নিস্তব্ধ পদচারণায় অন্যমনস্ক কিছু মানুষ। অন্যপ্রান্তে একটি শুকিয়ে যাওয়া কুঁয়োর উপর ধূসর ছত্রির আচ্ছাদন। পর পর জীর্ণ দেওয়াল জোড়া অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন। থ্রি নট থ্রি…
গায়ক রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর সংরক্ষিত কন্ঠ
আমাদের একটি দুঃখ কোনোদিন যাবেনা, যে দাপুটে কণ্ঠে ১৮৯৬ খৃস্টাব্দে বিডন স্কোয়ারে কংগ্রেসের অধিবেশনে যুবক রবীন্দ্রনাথ বিনা মাইক্রোফোনে শুধু জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিয়ানো বাদনের সঙ্গে ‘বন্দে-মাতরম’ গানটি গেয়ে প্রায় দশহাজার দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ এবংউদ্দীপ্ত করেছিলেন, সেই কন্ঠটিকে কোনো প্রযুক্তি দিয়ে ধরে রাখা যায় নি।কিম্বা ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে যে কণ্ঠের গান শুনে ’রবিরশ্মি’ বইয়ের লেখক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সভা…
আমি, আমরা আর রবীন্দ্রনাথ
এই লেখার কেন্দ্রে চার সদস্য রয়েছে – আমি, আমরা, তুমি এবং রবীন্দ্রনাথ। বাজার ছাড়া সমাজের সর্বত্র, এমনকি এই পত্রিকাতেও এই চার চরিত্র হাত ধরাধরি করেই আছে। বাজারে অবশ্য কেউ কারুর নয়। চলুন, ঢুকে পড়া যাক এই চার সদস্যের মাঝখানে। শুরুতে যে কথাটা ব’লে নেওয়া ভালো, তা হলো, ব্যক্তি যেমন নিজের ‘আমি’কে খুঁজছে প্রতি মুহুর্তে, তেমনি…
রবীন্দ্রনাথের ব্যতিক্রমী দুটি গ্রীষ্মসঙ্গীত
গ্রীষ্মের এই প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে আলোচনার জন্য বেছে নিলাম দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীত।রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি পর্যায়ের ২৮৩ গানের মধ্যে গ্রীষ্ম উপপর্যায়ের গানের সংখ্যা মাত্র ১৬। যেখানে বর্ষাসঙ্গীত ও বসন্তসঙ্গীতের সংখ্যা যথাক্রমে ১১৪ ও ৯৬। রবীন্দ্রনাথ গ্রীষ্মের গান লিখতে শুরু করেন ৫৮ বছর বয়স থেকে।রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে গ্রীষ্মঋতুকে প্রত্যক্ষ করেছেন মূলত দুটি দৃষ্টিকোন থেকে। কখনও কখনও গ্রীষ্মকে তিনি অনুভব…