শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির আলোচনা ও চর্চা

Category: বিষয়

  • রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর (দ্বিতীয় পর্ব)New

    রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর (দ্বিতীয় পর্ব)New

    রবীন্দ্রনাথের গানের “তুমি”, যা অনেকের কাছেই তাঁর ঈশ্বর বা জীবনদেবতারূপে প্রতিভাত, তা অতিবড় নিরীশ্বরবাদীকেও আন্দোলিত করে, উদ্বেলিত করে।     নিরীশ্বরবাদীরা অবশ্য তাঁর গানের গীতসুধাতে উদ্বেলিত হয়ে ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন,  তা কিন্তু নয়।  তাঁর গানের ঈশ্বর বা তুমিকে তাঁরা আবিষ্কার করেন মানবহৃদয়ের সহায়ক সত্তা হিসেবে,  এবং এই সত্তার প্রয়োজন যে তাঁদের নিজেদের জীবনেও কিছুমাত্র কম নয়…

  • হনন মুহূর্তNew

    হনন মুহূর্তNew

    বাইরে বৃষ্টির শব্দ হলেই সুমন্ত্র চোখ বুজে তার আওয়াজ শোনে। মনে হয় উস্তাদ আলি আকবর খানের সেতারে দেশ রাগ বাজছে। সুরের ভিতর সে যেন বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটার শব্দ আলাদা করে শুনতে পায়। জলপাইগুড়ির কলেজে চাকরি নিয়ে এসে সে ফারাকটা আরও ভালো করে বুঝেছে। কলকাতার বৃষ্টির মধ্যে যেমন একটা ছাপোষা গৃহস্থের বিরক্তি আছে, এখানে বৃষ্টি তা…

  • আরব সাগর তীরের সাহিত্য বাসরে সুনীল, সন্তোষকুমার, সমরেশ এবং শরৎচন্দ্রNew

    আরব সাগর তীরের সাহিত্য বাসরে সুনীল, সন্তোষকুমার, সমরেশ এবং শরৎচন্দ্রNew

    বিস্মৃতিচারণা (পাঁচ) সালটা ১৯৭৬। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শতবর্ষ পূরণের উদযাপন উপলক্ষ্যে সুদূর বোম্বাইতে বসেছে বাংলা সাহিত্যের তিন দিন ব্যাপী রাজসূয় সাহিত্য বাসর। তখনও বাণিজ্য নগরী দেশী নামকরণে মুম্বাই হয়ে যায়নি আর বঙ্গ সাহিত্যেরও এমন নক্ষত্রবিহীন ম্যাড়ম্যাড়ে দুর্দশাগ্রস্ত হালচাল হয়নি। প্রখ্যাত ‘দেশ’ সম্পাদক সাগরময় ঘোষের কণিষ্ঠ ভ্রাতা স্বনামধন্য প্রবাসী সাংবাদিক সলিল ঘোষের আহ্বানে…

  • মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৮)New

    মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৮)New

    পূর্বকথনঃ–ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর। হরিণনয়না, ক্ষীণকটি, নিম্ননাভি। যক্ষের কাজে ঘটে প্রমাদ। মন চলে যায় নিজ কক্ষের বাতায়নপথে। তার কর্মশৈথিল্যে ক্রুদ্ধ কুবের ধৈর্য হারালেন। নির্বাসন দিলেন অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে ।একাকী যক্ষ চলে এলেন সেই আশ্রমে। ক্ষীণদেহ, প্রিয়াবিযুক্ত। কণকবলয় হাত থেকে যাচ্ছে খুলে। ঘনিয়ে এল নীল নব মেঘমালা নিয়ে আষাঢ় মাস। রমণীরা যবে রজনী আঁধারে যাবে প্রিয় অভিসারে, দেখাইও তুমি পথ তাহাদের বিদ্যুৎ সঞ্চারে। গর্জন কিবা বর্ষণ নয় পথ কোরো আলোকিত। পথসন্ধান দিও তাহাদের তারা সচকিত ভীত। বহু উদ্ভাসে বিদ্যুৎপ্রিয়া হবে যবে অতিশ্রান্ত, বিশ্রাম নিও একটি রাত্রি হয়ো নাকো উদ্ভ্রান্ত। সুপ্ত যেথায় পারাবতকুল সেই ভবনের ছাদে, তুমিও ঘুমাও আরামে সেথায় তব প্রিয়তমা সাথে। পরপ্রত্যূষে দিবাকর যবে উদিত হইবে আকাশে, পথাবশিষ্ট লঙ্ঘিও মেঘ, অকাতরে অনায়াসে। . গম্ভীরা নদী স্বচ্ছ সলিলা প্রসন্ন চেতঃসম, সহজে তাহাতে ছায়ারূপ লভি প্রবেশিও অনুপম সফরিচটুল কমল আঁখির দীর্ঘ প্রতীক্ষারে, বিফল করিয়া ফিরে নাহি যেও সফল করিও তারে। উৎসুক আঁখি যদি যেতে চাও দেবগিরিপর্বতে, তব ধারাসারে তৃপ্ত বসুধা সেবিবে শীতল বাতে। সে বায়ু পরশে অরণ্যজাত রাঙা ডুমুরের ফলে, মোদিত হস্তী প্রকাশিবে সুখ নাসারন্ধ্রের জলে।41 বাসব সেনারে রক্ষা করিতে ইন্দুমৌলি ভগবান্, হূতবহমুখে আপনার তেজ করিয়াছিলেন সমর্পণ। আদিত্যাধিক তেজোদ্দীপ্ত স্কন্দ হেথায় করেন বাস, তাই এ গিরির দেবগিরি নাম, দেখিয়া হইও পূর্ণ আশ। তব গর্জনে মেলিতকলাপ ময়ূর উঠিবে নাচি, নৃত্যের তালে খসে পড়া তার পালক একটি গাছি, কর্ণে পরেন পার্বতী সতী ফেলি কুবলয়দল পুত্রের প্রতি অতি স্নেহ বৎসল। শরবনজাত হরতনয়ের সারা করি আরাধনা, চলে এস মেঘ, দেরি আর করিও না। বীণাধারী যত সিদ্ধমিথুন সিক্ত না হয় পাছে, পথ ছেড়ে তুমি দাঁড়াইও এক পাশে, সেখানে হেরিবে গোমেধ যজ্ঞশোণিত সমুদ্ভবা, স্রোতস্বিনীরে, রন্তিদেবের কীর্তি বিজয়গাথা। হে নীল জলদ, বারিপানে যবে হবে তুমি অবনত, গগনবিহারী সিদ্ধপুরুষ হেরিবে তোমারে যত, সুদূর হইতে ক্ষীণ নদী ধারা যেন সে মুক্তাহার। ইন্দ্রনীলের মতো তুমি নীল মাঝখানটিতে তার। (ক্রমশ) [পর্ব-৭]

  • ‘রাঢ় বঙ্গের কবি’ পৌঁছলেন একশ’ পঁচিশেNew

    ‘রাঢ় বঙ্গের কবি’ পৌঁছলেন একশ’ পঁচিশেNew

    ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ। রবীন্দ্রনাথ ত্রিশের কোঠা না-পেরোনো বাংলা সাহিত্যের উজ্বল জ্যোতিষ্ক হিসেবে চিহ্নিত। ‘মানসী’, ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ ইতিমধ্যেই তাঁকে তরুণ কবি হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছে; তখনো পর্যন্ত তাঁর দুটি মাত্র উপন্যাস ‘বৌ ঠাকুরাণীর হাট’ ও ‘রাজর্ষি’ প্রকাশিত। সদ্য বিশোর্ধ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তখনও ভাগ্যান্বেষণে ভ্রাম্যমাণ, সেভাবে লেখনী ধারণ করেননি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বছর পাঁচেকের…

  • রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর (প্রথম পর্ব)New

    রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর (প্রথম পর্ব)New

    অনাদি কাল হতে মানুষের মনে ঈশ্বর ভাবনা বা ঈশ্বর চেতনা এক জটিল প্রপঞ্চের মধ্যে আবর্তিত হচ্ছে। মানুষ ঈশ্বরের স্বরূপ সন্ধান করেছে তার মানবজন্মের প্রায় শুরু থেকেই। বুঝতে চেয়েছে “ঈশ্বর” কী? জানতে চেয়েছে, তার সর্বব্যাপী অনুসন্ধিৎসা দিয়ে সে জানতে চেয়েছে, ঈশ্বর আসলে ঠিক কী? নিত্যের মধ্যে এক অনিত্য, নাকি অনিত্যের মধ্যে এক সর্ব-চেতন নিত্য! ঈশ্বর কি…

  • হেমন্ত মুখোপাধ্যায় – অতিক্রান্ত শতবর্ষের অনুভব (পর্ব – ২)   New

    হেমন্ত মুখোপাধ্যায় – অতিক্রান্ত শতবর্ষের অনুভব (পর্ব – ২)   New

     “…একদিন হেমন্তদা আমাকে একটা লাল ডায়েরি দিয়ে বললেন, এই নাও আমার মায়ের ডায়েরি। পড়ে দেখ, অনেক কিছু জানতে পারবে।‌ ডায়েরিটা বাড়ি নিয়ে এসে পুরোটা পড়ে ফেললাম। সবচেয়ে আশ্চর্য হল, একটা জায়গায় উনি লিখেছেন যে, সেদিন উনি একটা রেকর্ডের দোকানে পাশাপাশি পঙ্কজ মল্লিক আর শচীনদেব বর্মণের ছবি দেখেছেন। সেখানে লিখেছেন, একদিন এঁদের পাশে আমার হেমন্তর ছবিও…

  • প্রমথেশ বড়ুয়া : চলচ্চিত্রের এক প্রবাদ-প্রতিম ব্যক্তিত্বNew

    প্রমথেশ বড়ুয়া : চলচ্চিত্রের এক প্রবাদ-প্রতিম ব্যক্তিত্বNew

    মহারাণী সরোজবালা প্রয়াত হয়েছেন। সারা প্রাসাদে জুড়ে শোকের ছায়া। ধুমধাম করে শ্রাদ্ধ হচ্ছে। মুন্ডিত মস্তকে শ্রাদ্ধে বসেছেন মহারানির জ্যেষ্ঠ পুত্র। দ্বাদশ পুরোহিত উচ্চকণ্ঠে মন্ত্রপাঠ করে চলেছেন অদুরে উপবিষ্ট স্বয়ং মহারাজ প্রভাতচন্দ্র। এমন সময় বাইরে প্রচন্ড গোলমালের শব্দ। গ্রামবাসীদের ভয়ার্ত চিৎকার –‘ বাঘ বেরিয়েছে! বাঘ বেরিয়েছে! মুহূর্তে পরিবেশ বদলে গেল। কয়েক মিনিটের মধ্যে বন্দুক কাঁধে বেরিয়ে…

  • ও আমার জুঁইNew

    ও আমার জুঁইNew

    পুষ্পে পল্লবে শোভিত ও সুরভিত রবীন্দ্র-সাহিত্যে জুঁই ফুলের সৌরভ-সন্ধান রবীন্দ্রনাথের গানে কোন কোন ফুল আছে এবং সর্বোপরি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী ভূমিকা তার চেয়ে বলা অনেক সহজ তাঁর গানে কোন কোন ফুল নেই। বাংলার পরিচিত ফুলগুলির মধ্যে গীতবিতানে নিম্নোক্ত ফুলগুলি অনুপস্থিত : ঘেঁটু, টগর, গাঁদা, ডালিয়া, গন্ধরাজ, শালুক, শাপলা। আরও কিছু ফুল থাকতে পারে, তবে…