Tag: Bengali Literature
- উন্মূলনNew
অদূরে কোর্ট-বাড়িটা নানা লোকের ভিড়ে আর তাদের আওয়াজে গমগম করছে। এ-পাশটায় মাঠে টেবিল পেতে বসা কিছু লোকজন খাতাপত্র লেখায় ব্যস্ত, তাদের ঘিরেও থোকা থোকা কিছু লোকের ভিড়। আর এক পাশে কিছু খাবারের দোকানের ছাউনি, তার সামনে কাঠের বেঞ্চি পাতা । সেই দোকানের সারি যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে একটা গাবগাছের ঝাঁকড়া ছায়া, লোকজনের ভীড় কম। সেই…
- আগে একবার জিজ্ঞেস করলেই …New
প্রতিবার রহস্য করে গল্প শুরু করার কোন মানে হয় না। এবার শুরুতেই বলে নেওয়া যাক এই গল্পের নিষ্প্রাণ নায়ক একটি ‘কামড়ানো কাঁঠাল ছাপ’ আমিফোন। তবে নায়ক ? না খলনায়ক ? না শেষ পর্যন্ত কোন বিবেকের ভূমিকায় সে আছে সেটা ঠিক বোঝা গেল না। আপাতত আমরা যাব দীননাথ দন্ডপাটের শোবার ঘরে। ভয় নেই। লেখক নিতান্ত ধম্মোভীরু…
- দুটি কবিতাNew
দৃষ্টিকোণ কিছুটা সুযোগ পেলে সকলেই জাল ছুঁড়ে মারে যেভাবে হাত পা বেঁধে পশুর শিকার হয় বনে, তবুও অনেক দেহ পিষে গিয়ে বেঁচে যেতে পারে বাকিরা আটক হয় না জেনেই শুধু প্রয়োজনে। অপর শিবির থেকে যে কথাটা অপরাধমুখী— একই কথা নিজ মুখে স্বাভাবিক মনে হলো যাঁর, তাঁরাই তো আজীবন অকারণে রয়ে যাবে সুখী তাঁদের আয়নাটাও মাঝে…
- মহাকবি কালিদাসকৃত মেঘদূতের ভাবানুবাদ (পর্ব-৭)New
পূর্বকথনঃ–ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর।…
- হারিয়ে যাওয়া অভিজ্ঞানNew
ঋষি বিশ্বামিত্র ও অপ্সরা মেনকার কন্যা শকুন্তলা, জন্মলগ্নেই পিতা মাতার দ্বারা পরিত্যক্ত। আশ্রয় দিলেন আরেক ঋষি, কণ্ব। অনসূয়া, প্রিয়ম্বদা সহ আরও অনেক আশ্রমিকের সঙ্গে মনোরম তপোবনে বেড়ে ওঠে শকুন্তলা। আবাল্য লালিত মানবিকবোধ নিয়ে বহির্জগতের সঙ্গে তার সাক্ষাত ঘটে, রাজা দুষ্যন্তের হাত ধরে। প্রেমিক রাজার সাহচর্যে কিছুদিন তপোবনের পরিচিত স্থানেই দিন কাটে শকুন্তলার। অতঃপর রাজকার্যে দুষ্যন্তের…
- আঁধার পেরিয়েNew
১ “কাহার অভিষেকের তরেসোনার ঘটে আলোক ভরে।উষা কাহার আশিস বহিহল আঁধার পার।” মাঝেমধ্যে কিছু লাইন আমার ভিতর রাজত্ব করে। দেবদারু পাতায় সাজানো ছোট্ট মঞ্চ – সেখানে একটা হারমোনিয়াম তবলা ও মাইক্রোফোন। সন্ধের একটু আগে কালবৈশাখী থামলে বেজে ওঠে কিশোর কুমারের কণ্ঠে এই গানের কলি – পাড়ার রবীন্দ্রজয়ন্তী। এখনও একটা ঘোর। এখানে আমি সেরকম কিছু একটা…
- নিরালা দুপুরের ভয়ঙ্করের গল্পNew
আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি। বাড়িতে বাবা, মা, দাদু, কাকা, কাকিমা ছোট ছোট ভাই আর দাদাদের সাথেই আমার বেড়ে ওঠা। এছাড়া প্রতিবেশী সমবয়সী বন্ধুরা তো ছিলই। সারাদিনে স্কুলে যাওয়া, পড়াশুনো ছাড়াও খেলা-ধুলো, ঝগড়া-খুনসুটিতে ভারী ব্যস্ত থাকতাম। তবু এসবের মধ্যেও সেই অল্প বয়স থেকেই প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য আমি সবার থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে একা হয়ে…
- শিব্রাম চকরবরতি ও পেনেটির গুপো সন্দেশNew
বিস্মৃতিচারণা (চার) আমার এবারের বিস্মৃতিচারণায় ভেসে আসছে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি বাংলা সাহিত্যের রসসম্রাট শিবরাম চক্রবর্তীর আগরপাড়ার প্রভাসতীর্থে আগমন ও তাঁর অসামান্য ভোজনপ্রিয়তার ইতিবৃত্ত। কলকাতার বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলনের তিন দিনব্যাপী আসর বসেছে প্রভাসতীর্থের সভাঘরে। এক এক দিন বিভিন্ন পর্বে এক একটি বিষয় নিয়ে বিশিষ্ট অতিথিদের বক্তৃতা, আলোচনা, সাহিত্য পাঠ। আসছেন বাংলা সাহিত্যের তদানীন্তন কুশীলবরা। দিনটা ছিল…
- দুটি কবিতাNew
হলুদ আলো হলুদ আলো হলুদ আলোপড়ছে এসে মেঝের ওপরউড়ছে ধুলোয়, ত্রসরেণুররোমাঞ্চে আজ একলা ঘরেডাকছে কাকে, নষ্ট সময়?ডাকছে কাকে, ভালবাসায়মেলছে পাখা, কার আশাতেহলুদ আলো পাখির মতোএই অবেলায়, বিকেলবেলায়? দোসর সে কোন দুঃখের ঘরে থাকেনি কোনদিনতবু তাকে ভালবাসিসে কোন সান্ত্বনার হাতছোঁয়ায় নি ক্লান্ত কপালে কোনদিনতবু তাকে ভালবাসিসে আমার আত্মার দোসরতাই তাকে ভালবাসি।