শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির আলোচনা ও চর্চা

Category: কবিতা

  • ব্রাত্যজনNew

    ব্রাত্যজনNew

    শ্রী দেবব্রত বিশ্বাস, চিরঞ্জীবেষু সেদিন মৃত্যু কণ্ঠ রুদ্ধ গানের ভিতর,বরফের মতো ধ্বনিহীন নীল অভিমানী স্বর,ভিতরে ভিতরে স্তব্ধ গানের স্থির কল্লোলতার ছিঁড়ে যাওয়া যেন তানপুরা শূন্য অতল। ব্রাত্যজনের রুদ্ধ তখন রবীন্দ্রনাথ,মৌন খসিয়ে নেমে আসছিল অনন্ত রাত। এই স্তব্ধতা ক্ষান্ত বজ্র-মেঘ গর্জনে,ভাটিয়ালি সুর ভাঁটার টানেতে দূর থেকে দূরে,বৃষ্টিক্লান্ত মেঘ ভাঙা জল নীলাঞ্জনের,জল তার গানে রেশ রেখে যায়…

  • বিলীন হওয়ার আগেNew

    বিলীন হওয়ার আগেNew

    সুস্বাস্থ্য ধানের মতো আমাদের জীবনগুলোআরো বেশি সোনালি হতে পারতো।শুকনো নদী পেতে পারতো আরেকটু জল,আকাশ হতে পারতো আর একটু নীল।রুদ্ধ দরজাগুলোতে মাঝে মাঝে শুনিঝোড়ো হাওয়ার অভিঘাত!অথচ ভয়ের মুখোশ পরে বসে আছি।মাঝিভাই নৌকা ভিড়াও-কূলে কূলে ভেসে থাকার বিলাসিতা আর নয়,চলে যাব মাঝদরিয়ায়।দুরন্ত ঢেউয়ের ঝুঁটি চেপে ধরবশিশুর মতো হেসে হেসেবিলীন হয়ে যাওয়ার আগেসমুদ্র-দানোকে শান্ত করার স্পর্ধা দেখিয়েমিশে যাওয়া…

  • দুটি কবিতাNew

    দুটি কবিতাNew

    এটুকুই দুচোখে দুচোখ রাখাঅনৃত মায়ায়বেঁধে নেওয়া ভঙ্গুর সময়এটুকুই, আর কিছু নয় ঋণ তুমি চলে গেলেতোমার পদচ্ছাপ নেওয়া হল না তুমি চলে গেছআমি দিক-ভোলা বোষ্টুমির মতোভর দুপুরে পা ছড়িয়ে বসে গান গাইদাওয়ার চারপাশে মাধবীলতা আর সন্ধ্যামালতি লাগিয়েছিপথ ভুলে আস যদিনীলকমল হৃদয়টির সাথে কচি-গোলাপ রঙঅঞ্জলির অভাব হবে না তুমি এলে না, আসবে না আরতবু আমি অপেক্ষায় থাকি…সাঁঝঘরের…

  • মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ১০)New

    মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ১০)New

    পূর্বকথনঃ–ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর।…

  • বাদশা খান- শেষ অভিবাদনNew

    বাদশা খান- শেষ অভিবাদনNew

    তোমাকে কখনও দেখিনি খবরকাগজ বা বইয়ের পাতার বাইরে,তবু জানতাম, তুমি আছ —আমাদের জন্মের সাথে পাওয়া আরও কতো সম্পত্তির মতো।তথ্যচিত্রে দেখেছি তোমাকে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায়গুলো জুড়ে ভাস্বর…দেখেছি- কত লম্বা হয়েও গান্ধীর পেছনে অনুগমনে নত তোমাকে,দেখেছি তোমার সামনে নেহরুও কত খাটো– চেষ্টা করে হাত রাখছেন তোমার কাঁধে.ছবিতে দেখেছি, তুমি দাঁড়িয়ে আছ সুভাষচন্দ্রের পাশে,যেন অগ্নির পাশে প্রাচীর– পূর্বের পাশে…

  • মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৯)New

    মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৯)New

    পূর্বকথনঃ–ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর। হরিণনয়না, ক্ষীণকটি, নিম্ননাভি। যক্ষের কাজে ঘটে প্রমাদ। মন চলে যায় নিজ কক্ষের বাতায়নপথে। তার কর্মশৈথিল্যে ক্রুদ্ধ কুবের ধৈর্য হারালেন। নির্বাসন দিলেন অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে ।একাকী যক্ষ চলে এলেন সেই আশ্রমে। ক্ষীণদেহ, প্রিয়াবিযুক্ত। কণকবলয় হাত থেকে যাচ্ছে খুলে। ঘনিয়ে এল নীল নব মেঘমালা নিয়ে আষাঢ় মাস। জনপদে যবে প্রবেশিবে তুমি ব্রহ্মাবর্তনাম, দেখিবে ক্ষাত্রসংঘাতক্ষত কুরুক্ষেত্র ধাম। শতদলপরে বর্ষণসম তব, রাজন্যগণে বিদ্ধ করেন অর্জুন পান্ডব। স্বজনের প্রতি প্রীতি পরবশ বলরাম, ত্যজিয়াছিলেন রেবতীলোচন বিম্বিতসুরাপান সরস্বতীর স্বাদু জলপানে তৃপ্ত তাঁহারই সম, বাহিরে কৃষ্ণ, অন্তরে শুচি হইও হে অনুপম। কনখল থেকে নাতিদূরস্থ হিমালয় অবতীর্ণা গঙ্গাসমীপে যাইও হে মেঘ, জহ্নুমুনির কন্যা। একশত ষাট সগরতনয় যাহার পুণ্যপরশে,…

  • বাইশে শ্রাবণের কবিতাNew

    বাইশে শ্রাবণের কবিতাNew

    তোমার সুরে আকাশজুড়ে          ঘন  আড়ম্বর মেঘ ডাকছে         যেন  যুগান্তরে … তামসী-নীল             সমুদ্র  মুখর গীতবিতানে        বৃষ্টি ভেঙে পড়ে। বৃষ্টি পড়ে         সে কোন শ্রাবণের স্মৃতিতে বাজে       তোমার মল্লার, সে সুর যেন               স্বপ্ন নির্জনে নিষাদ ছোঁয়া        নীরব হাহাকার। প্রমত্ততা           স্বেচ্ছাচারী  মেঘে তোমার সুরে     তখন উঠি জেগে , মেঘের পরে     মেঘ ঘনিয়ে আসে প্রলয় মাতে            ভরা সর্বনাশে। বজ্রপাতে              মেঘের…

  • মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৮)New

    মেঘদূত ভাবানুবাদ (পর্ব – ৮)New

    পূর্বকথনঃ–ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর। হরিণনয়না, ক্ষীণকটি, নিম্ননাভি। যক্ষের কাজে ঘটে প্রমাদ। মন চলে যায় নিজ কক্ষের বাতায়নপথে। তার কর্মশৈথিল্যে ক্রুদ্ধ কুবের ধৈর্য হারালেন। নির্বাসন দিলেন অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে ।একাকী যক্ষ চলে এলেন সেই আশ্রমে। ক্ষীণদেহ, প্রিয়াবিযুক্ত। কণকবলয় হাত থেকে যাচ্ছে খুলে। ঘনিয়ে এল নীল নব মেঘমালা নিয়ে আষাঢ় মাস। রমণীরা যবে রজনী আঁধারে যাবে প্রিয় অভিসারে, দেখাইও তুমি পথ তাহাদের বিদ্যুৎ সঞ্চারে। গর্জন কিবা বর্ষণ নয় পথ কোরো আলোকিত। পথসন্ধান দিও তাহাদের তারা সচকিত ভীত। বহু উদ্ভাসে বিদ্যুৎপ্রিয়া হবে যবে অতিশ্রান্ত, বিশ্রাম নিও একটি রাত্রি হয়ো নাকো উদ্ভ্রান্ত। সুপ্ত যেথায় পারাবতকুল সেই ভবনের ছাদে, তুমিও ঘুমাও আরামে সেথায় তব প্রিয়তমা সাথে। পরপ্রত্যূষে দিবাকর যবে উদিত হইবে আকাশে, পথাবশিষ্ট লঙ্ঘিও মেঘ, অকাতরে অনায়াসে। . গম্ভীরা নদী স্বচ্ছ সলিলা প্রসন্ন চেতঃসম, সহজে তাহাতে ছায়ারূপ লভি প্রবেশিও অনুপম সফরিচটুল কমল আঁখির দীর্ঘ প্রতীক্ষারে, বিফল করিয়া ফিরে নাহি যেও সফল করিও তারে। উৎসুক আঁখি যদি যেতে চাও দেবগিরিপর্বতে, তব ধারাসারে তৃপ্ত বসুধা সেবিবে শীতল বাতে। সে বায়ু পরশে অরণ্যজাত রাঙা ডুমুরের ফলে, মোদিত হস্তী প্রকাশিবে সুখ নাসারন্ধ্রের জলে।41 বাসব সেনারে রক্ষা করিতে ইন্দুমৌলি ভগবান্, হূতবহমুখে আপনার তেজ করিয়াছিলেন সমর্পণ। আদিত্যাধিক তেজোদ্দীপ্ত স্কন্দ হেথায় করেন বাস, তাই এ গিরির দেবগিরি নাম, দেখিয়া হইও পূর্ণ আশ। তব গর্জনে মেলিতকলাপ ময়ূর উঠিবে নাচি, নৃত্যের তালে খসে পড়া তার পালক একটি গাছি, কর্ণে পরেন পার্বতী সতী ফেলি কুবলয়দল পুত্রের প্রতি অতি স্নেহ বৎসল। শরবনজাত হরতনয়ের সারা করি আরাধনা, চলে এস মেঘ, দেরি আর করিও না। বীণাধারী যত সিদ্ধমিথুন সিক্ত না হয় পাছে, পথ ছেড়ে তুমি দাঁড়াইও এক পাশে, সেখানে হেরিবে গোমেধ যজ্ঞশোণিত সমুদ্ভবা, স্রোতস্বিনীরে, রন্তিদেবের কীর্তি বিজয়গাথা। হে নীল জলদ, বারিপানে যবে হবে তুমি অবনত, গগনবিহারী সিদ্ধপুরুষ হেরিবে তোমারে যত, সুদূর হইতে ক্ষীণ নদী ধারা যেন সে মুক্তাহার। ইন্দ্রনীলের মতো তুমি নীল মাঝখানটিতে তার। (ক্রমশ) [পর্ব-৭]

  • দুটি কবিতাNew

    দুটি কবিতাNew

    দৃষ্টিকোণ  কিছুটা সুযোগ পেলে সকলেই জাল ছুঁড়ে মারে যেভাবে হাত পা বেঁধে পশুর শিকার হয় বনে, তবুও অনেক দেহ পিষে গিয়ে বেঁচে যেতে পারে বাকিরা আটক হয় না জেনেই শুধু প্রয়োজনে। অপর শিবির থেকে যে কথাটা অপরাধমুখী— একই কথা নিজ মুখে স্বাভাবিক মনে হলো যাঁর, তাঁরাই তো আজীবন অকারণে রয়ে যাবে সুখী তাঁদের আয়নাটাও মাঝে…