Tag: Jhuma Bandyopadhyay
শূন্য কলরোল
মঞ্চ গড়ে এই আয়োজনসুরক্ষাকে আগলে রাখে বিধিবদ্ধ ঋণমিষ্টি সুবাস নাই বা মিলুকচলতে থাকুক ভুলের খেলাজল খায় না প্লাস্টিক ফুল মজলিসটি বেজায় পোক্ত – ফায়দারা শৌখিন। তীব্র ভাবে আঁকড়ে ধ’রে তারই অংশ হইসুযোগ বুঝে ঘৃণা ছুড়িআড়াল পেলে লুকাই সুখযদিও উদ্ধৃতিরা বড়োই সাধারণচিরাচরিত স্বভাবখানা –বরাবরই বয়ে বেড়ায় কালের বোঝামানোন্নয়ন করে না সমর্থন। তোমার দেশ তোমার বেশ সাজুক…
স্বপ্নতরু
পরার্থপরতার প্রতি জগবন্ধুর আর আস্থা রইল না। তাঁর অফিসের বস চক্রবর্তীবাবু অতীব সদাশয় পরোপকারী মানুষ । তাঁর কন্যা গত কয়েকদিন আগেই অকাল বিধবা হলেন। বাড়ির ফলবতী আমগাছটা বাজ পড়ে নষ্ট হল। জগবন্ধুর স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান হবার সময় রক্তাল্পতা জনিত কারণে প্রসবের সময় বিরল গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হল , তখন এই মানুষটিই শোনা মাত্র নিজের রক্ত…
খরা
ফাগুন শেষে মাটির কষ্ট, তৃষ্ণা কাতর প্রাণআগুন ছোঁয়া শস্য ক্ষেতে,মনের বিরূপ টান। দীঘল চোখে শুকিয়ে কাজলরাতমোহিনী হাঁকে,‘জল চাই গো, জল যে খরা,জল কোথাকে পাই’-এ পোড়া দেশ ক্লান্ত বড়ো,নটে গাছটি মুড়াই আরোবাউড়ি পাড়ার পথে ঘাটেউড়ছে ধুলোর ছাই।‘জল চাই গো, জল যে খরা,জল কোথাকে পাই।’ ফাগুন শেষে একলা ঘর- একলা মনের টানরাত দুপুরে প্রসব ব্যথায়পোয়াতি আনচান। ঋণের…
খোঁখীর বিয়ে
ঠিক দশটা বেজে পাঁচ, ট্রেন ছাড়ল। খানিকটা গিয়েই অবশ্য দাঁড়িয়ে পড়ল। উন্নয়নের ঠ্যালা, রেল ব্রীজ মেরামতি চলছে। তবে পনেরো মিনিট রেস্ট নিয়ে এক্সপ্রেস গতিতে এবার সে টগবগিয়ে ছুটল । পৌষ মেলার ভিড়। তারই মাঝে প্রথমে মায়ের ফোন, তারপর রত্নার,”কী রে, কতদূর?” রত্না আমার ছোটবেলা থেকে ছায়াসঙ্গি । দু’বছর পর দিল্লী থেকে ফিরে বেচারি হাঁকপাক করছে…
নীলকুঠির রোদ্দুর
১হিমাদ্রি সাওপাওলো…. বয়স গোটা তিরিশেক হবে। বাপের ছোট পুত্র। একটি প্রাইভেট স্কুলের ইতিহাস শিক্ষক। মাইনে প্রায় হাজার পনেরো। ভাগ্যিস বউ বাচ্চা নেই। এই মাইনেতে শহরবাজারে চালানো কঠিন। একসময় সরকারী চাকরি বাকরির অনেক পরীক্ষা দিয়েছিল কিন্তু বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। শখ ফটোগ্রাফি ও স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি নির্মাণ। প্রকৃতির টানে প্রাইভেট স্কুলের লম্বা গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে মাঝেমাঝেই বেরিয়ে…
ফাঁদ
১ মাস্টারমশাই শিখিয়েছিলেন কীভাবে ভয় পেতে হয়মা বাবা বাড়ির বড়োরাও সকাল বিকেল সন্ধ্যা পাখিপড়া করে মুখস্থ করিয়েছিলেন ভয় পাওয়ার ইতিবাচক ফলাফল…. পাশের বাড়ির অকেজো লোকটা জীবন দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল ভয় না পেলে সমাজ সংসার কীভাবে তলিয়ে যায় স্পর্ধার আকাশে…… প্রত্যেকটা বস সদর্পে ঘোষণা করেছে,“ভয়, না পেলে বেরিয়ে যাও।” ভয় পেতে পেতে কবেই হারিয়ে ফেলেছি ভাষা…
আঁধার পেরিয়ে
১ “কাহার অভিষেকের তরেসোনার ঘটে আলোক ভরে।উষা কাহার আশিস বহিহল আঁধার পার।” মাঝেমধ্যে কিছু লাইন আমার ভিতর রাজত্ব করে। দেবদারু পাতায় সাজানো ছোট্ট মঞ্চ – সেখানে একটা হারমোনিয়াম তবলা ও মাইক্রোফোন। সন্ধের একটু আগে কালবৈশাখী থামলে বেজে ওঠে কিশোর কুমারের কণ্ঠে এই গানের কলি – পাড়ার রবীন্দ্রজয়ন্তী। এখনও একটা ঘোর। এখানে আমি সেরকম কিছু একটা…