Tag: Shibanshu Dey
হন্যমান স্বদেশ ও একজন কবি
ঊনিশশো পঁচাত্তর সালে প্রথম হরমন্দির সাহিব পরিসরের একপাশে প্রায় লুকিয়ে থাকা জালিয়াঁওয়ালাবাগের ভাঙাচোরা গলিতে পা রেখেছিলুম। ভিতরে কোটা’র লালপাথরের অমরজ্যোতি ছাড়া আর কোনও নির্মাণ ছিলো না। সামান্য কেয়ারি করা কিছু তৃণভূমি, নিস্তব্ধ পদচারণায় অন্যমনস্ক কিছু মানুষ। অন্যপ্রান্তে একটি শুকিয়ে যাওয়া কুঁয়োর উপর ধূসর ছত্রির আচ্ছাদন। পর পর জীর্ণ দেওয়াল জোড়া অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন। থ্রি নট থ্রি…
সাতকোশিয়ার সাতকাহন
উড়ানটাই জীবন। বাকি সময়টা সেই জীবনের জন্য অপেক্ষা করা। জুতোকে বিরাম দিতে নেই। এদিক ওদিক বেড়ানোর স্মৃতি নেড়েচেড়ে এই মুহূর্তে অপেক্ষা করি আবার কবে জুতোটা পায়ে উঠবে। গারদের মেয়াদ সবার বুকেই চেপে বসছে প্রতিদিন। শুধু প্রকৃতির কাছে সমর্পণ, নানা জায়গার উড়ান স্মৃতি নিয়ে জীবনের সাত কাহন গড়ে ওঠে। ভূতের রাজার জুতো পাইনি তো গুপীবাঘার মতো।…
আকাড়া কিশোরী ও একটি নদী
‘….. আকাড়া কিশোরী যেন সেদিনের বসন্ত পঞ্চমীহাসি নেই, অশ্রু আছে, দুচোখে চাঁদের ছায়া স্মৃতি টানে, গোপন সাবানেজলজ গায়ের গন্ধ। চলে যায় মরি হায় বসন্তের দিন চলে যায়….’(একদিন, শৈশবে, সমুদ্রে: এই আমি, যে পাথরেঃ- শক্তি চট্টোপাধ্যায়) বসন্তপঞ্চমী এরকমই ছিল আমাদের সে বয়সে। বাসন্তী শাড়ি, লুকিয়ে চাওয়া, আতপচালের ছড়ানো সৌরভ, ছুটন্ত সাইকেলে ব্যস্ত পুরোহিত। আর, অন্যদিন যে…
পুজোয় চাই নতুন গান…
প্রথম পর্ব এই লেখা যাঁরা পড়ছেন, জানি না ছোটোবেলা বা বড়োবেলাতেও, তাঁদের কতজনের জন্য সারা বছর নতুন জামা-জুতো কেনা হতো? আমার তো হতো না। যা কিছু ‘নতুন’ প্রাপ্তি’ সবই বছরের কোনও একটা বিশেষ সময়ের জন্য রাখা থাকতো। বাটা কোম্পানির এই শাশ্বত বিজ্ঞাপনটি শুধু জুতোর জন্য নয়, বাঙালি যাপনের একটি সংক্ষিপ্ততম স্লোগান। পয়লা বৈশাখ থেকে পঞ্জিকা…
পরানের সাথে খেলিব আজিকে- ২
” হে রুদ্র, তোমার দুঃখরূপ, তোমার মৃত্যুরূপ দেখিলে আমরা দুঃখ ও মৃত্যুর মোহ হইতে নিষ্কৃতি পাইয়া তোমাকেই লাভ করি…. তোমার সেই ভীষণ আবির্ভাবের সম্মুখে দাঁড়াইয়া যেন বলিতে পারি, আবিরাবীর্ম এধি, রুদ্র বত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যম।”(মাঘ উৎসবের ভাষণ থেকে, ১৩১৪ সাল) কবির ছোটো ছেলে শমীন্দ্র বেড়াতে গিয়েছিলেন মুঙ্গেরে, কবির এক বন্ধুর বাড়িতে। এগারো…
পরানের সাথে খেলিব আজিকে-১
মৃত্যুরাখালের গর্বের শেষ নেই। যে জীবন নিয়ে মানুষের এতো অহমিকা, স্বজন-পরিজন সংসারের তৃপ্ত আবহ, অর্থ-কীর্তি-সচ্ছলতার উত্তুঙ্গ মিনার, তা’কে এক ফুঁয়ে সে ধূলিসাৎ করে দিতে পারে। তার সামনে নত হয়ে থাকে রাজার রাজা, ভিখারির ভিখারি, সম্মান-অসম্মানের ভিতে গড়া অনন্ত নক্ষত্রবীথি, পাবকের পবিত্র অগ্নি থেকে মৃত্যুরাখাল কাউকে রেহাই দেয়না। সে তো ভাবতেই পারেনা একটা রক্তমাংসের মানুষ সদানন্দ…
বাবা কা নগরী – আমাদের সাড়ে তিন হাত জমি
(দ্বিতীয় পর্ব) काशी में इक मिला जुलाहाबोला : हमको ज़रा बतानाजो क़मीज़ पहनी है तुमनेक्या उसमें नहिं ताना-बाना(ताना-बाना- हरि मृदुल)(কাশীতে এক জোলার সঙ্গে দেখা হলো। সে বলে, আমাকে কী বলতে পারবে? যে কামিজটা তুমি পরে আছো,তাতে কি টানা-পোড়েন নেই?)(তানাবানা-হরি মৃদুল) আমাদের সভ্যতার গর্ব গঙ্গা-জমনি তহজীব। অর্থাৎ এই সংস্কৃতির ভিত্তিতে আছে এদেশের দুই প্রধান নদী, গঙ্গা…