Category: বিস্মৃতিচারণা
আমার ‘বনফুল’ সন্দর্শন
বিস্মৃতিচারণা (১৪) সচেতন তারুণ্যে আমার প্রথম বাংলা সাহিত্যের বনস্পতি সন্দর্শন যাঁর সঙ্গে, তিনি ডাক্তার বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়, ওরফে বনফুল। আমার এই ক্ষুদ্র অতীতচারণার মুখবন্ধে বনফুল প্রসঙ্গে ভাষাতাত্ত্বিক আচার্য সুকুমার সেনের ‘বনফুলের ফুলবন’ গ্রন্থটি থেকে তাঁর দুটি উক্তি স্মরণ করতে ইচ্ছে করছে। তিনি বলেছিলেনঃ “তাঁর সাহিত্য সৃষ্টিতে ’ফুল’ আছে, ‘বন’ অর্থাৎ উপবন – ফলপ্রসু ও ছায়াবৃক্ষও আছে।…
বিচিত্র অটোগ্রাফ সংগ্রহকথা : উদয়শঙ্কর ও ইমরান খান
কৈশোরের ঠিক কোন সময়টি থেকে অটোগ্রাফ সংগ্রহের নেশা আমাকে পেয়ে বসেছিল তা আর আজ মনে পড়ে না। তবে এটুকু মনে আছে, আমার মায়ের কাছে তাঁর তরুণীবেলার একটি কাহিনি গোগ্রাসে গিলেছিলাম।
রেবতীভূষণ
চলচ্চিত্র প্রযোজক বি এন সরকারের অনুরোধে বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম অ্যানিমেশান ছবি ‘মিচকে পটাশ’এর চরিত্রায়ণ রেবতীভূষণেরই। ছবি আঁকার পাশাপাশি ছড়া লেখা, গান বাজনা, সাঁতারেও রেবতীভূষণের বিপুল উৎসাহ আজীবনের। তাঁর রচিত ছড়ার সঙ্কলনটির নাম “ছড়ানো বই”।
‘মাংপবী’ মৈত্রেয়ী দেবীর সান্নিধ্য-সুখ
বিস্মৃতিচারণা (১১) সময়টা আশির দশকের একেবারে গোড়ার দিক। সম্ভবত ১৯৮১ সাল। আমার পিতৃদেবের আগ্রহে বাড়িতে আসতে লাগল মৈত্রেয়ী দেবীর একের পর এক অসামান্য সব গ্রন্থ। ‘ন হন্যতে’ পড়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। এরপর হাতে এল ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’। নেশা গভীর হল। আরও, আরও, আরও। এক মহীরুহর মানসকন্যার কলমে বিশ্ববরেণ্য কবির ব্যক্তিসত্তার অন্তরমথিত করা অনিঃশেষ উন্মোচন। পরের পর…
শিব ঠাকুরের আপন দেশে বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে…(১০)
১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রস্তুতি চলছে কাশীতে সুবর্ণ জয়ন্তী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের। সাহিত্যপ্রেমী বাঙালির সম্বৎসরিক তিন দিনের সম্মেলন। লেখক ও পাঠকদের এ এক সর্বভারতীয় মিলনমেলা। পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের শাখা-সংগঠনের মাধ্যমে সাহিত্য-সচেতন বাঙালি জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশের মানুষের মধ্যে সম্মেলনে উপস্থিত থাকার ব্যবস্থাদি চলছে পূর্ণদ্যোমে। বলে নেওয়া ভাল, আজকের সময়ে বসে সেদিনের সাহিত্যপিপাসু সাধারণ…
সরস সঞ্জীব-সান্নিধ্যে
বিস্মৃতিচারণা – পর্ব (৯) আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলার রসসাহিত্যের অদ্বিতীয় লেখক তিনি। বাংলা সাহিত্যের পাঠক মাত্রেই জানেন যে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, রাজশেখর বসু (পরশুরাম) ও শিবরাম চক্রবর্তীর পর বাংলা সাহিত্যে রসের ধারাটিকে সজীব করে তুলেছিলেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় তাঁর সহজাত দক্ষতায়। রাজনীতি, সমাজ, গৃহকোণ সর্বত্রই অবাধে বিচরণ করেছেন রঙ্গব্যঙ্গ, বিদ্রুপ ও শ্লেষের ক্ষুরধার ও তীক্ষ্ণ লেখনীটি…
শ্রীকান্ত-ইন্দ্রনাথের লীলাভূমিতে
বিস্মৃতিচারণা – পর্ব (৮) রাত্রে দেখা সুখস্বপ্ন যেমন কোনো ধারাবাহিকতার ধার ধারে না, ফেলে আসা বিস্মৃত সময়ের সুখস্মৃতিও ক্রমানুসারে মনের চালচিত্রে ধরা দেয় না. ওরা আসে কিছুটা অসংলগ্নতা নিয়ে, কিছুটা বিচ্ছিন্নভাবে। আপন খেয়ালে আপনিই ওরা আসে, আপনিই ভেসে চলে যায়।বিস্মৃতিচারণার এই পর্বের সূচনায় যে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি বার্ষিক অধিবেশনের মধুর স্মৃতিরোমন্থন আমার আলোচ্য বিষয়, ১০০ বছর…
বাংলা সাহিত্যের সম্মেলন থেকে ভেসে আসা বর্ণময় কিছু খন্ডচিত্র
বাংলা সাহিত্যের সম্মেলন থেকে ভেসে আসা বর্ণময় কিছু খন্ডচিত্র ইতিপূর্বে আপনাদের শুনিয়েছি বোম্বাইতে অনুষ্ঠিত ১৯৭৬-এর সাড়া জাগানো বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলনের প্রথম দিনের প্রভাতী অধিবেশনে বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের শরৎ-সাহিত্য বিতর্ক। তারই রেশ ধরে মনে পড়ছে অধিবেশনের তিনটি দিন ধরে পর্বে পর্বে ছোট ছোট ঘটনার আরও কিছু খন্ডচিত্র।
উত্তমকুমার সমীপে
সত্তরের দশকের প্রায় মধ্যভাগ। তখনও কলেজের গন্ডী পেরোইনি। একদিকে উত্তমকুমার, অন্যদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে চলেছেন। বাকি সব মহীরুহসম শিল্পীদের কুর্নিশ করেও বলি, এক বিরাট সংখ্যক বাঙালির মতো এই দুজনকে নিয়ে আমাদের আবেগের আতিশয্য ছিল বেশি। তা, হেমন্তবাবুকে দেখা, একাধিক বার তাঁর গান শোনা, হয়ে গেছে। কিন্ত মহানায়কের সাক্ষাৎ দর্শন? তার সুলুক সন্ধান তখনও…