পূর্বকথনঃ-
ধনপতি কুবের। কৈলাসে তার আবাস। নগরীর নাম অলকা। পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের ধাম। সুউচ্চ প্রাসাদ ভবন নগরীর আকাশকে স্পর্শ করছে। ভবনের ছাদ শিখীর নৃত্যে ছন্দিত। মধুপ গুঞ্জরিত শতশতদলে সরোবরগুলি সদা আন্দোলিত। রাত্রি নিত্য জ্যোৎস্নাজড়িত। আনন্দাশ্রুছাড়া নয়নসলিল সেখানে বিরল। আর বয়স তো যৌবনেই আবদ্ধ। কুবেরের কর্মসচিব যক্ষ। তরুণবয়স সদ্যপরিণীত। সুন্দরী বধূটি। তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা, তন্বী, শিখরীদশনা,পাকা বিম্বফলের মতো অধর। হরিণনয়না, ক্ষীণকটি, নিম্ননাভি। যক্ষের কাজে ঘটে প্রমাদ। মন চলে যায় নিজ কক্ষের বাতায়নপথে। তার কর্মশৈথিল্যে ক্রুদ্ধ কুবের ধৈর্য হারালেন। নির্বাসন দিলেন অলকা থেকে রামগিরি আশ্রমে ।একাকী যক্ষ চলে এলেন সেই আশ্রমে। ক্ষীণদেহ, প্রিয়াবিযুক্ত। কণকবলয় হাত থেকে যাচ্ছে খুলে। ঘনিয়ে এল নীল নব মেঘমালা নিয়ে আষাঢ় মাস।
মেঘদূত
ক্ষান্তবৃষ্টি, মেঘ সেথা যাবে তুমি
বন্যগজের মদবারিমেশা রেবাজল যেও চুমি।
জম্বুকুঞ্জপ্রতিহত স্রোতোজল বহি চলে ছলছল।
অন্তর যার ঘনীভূত সারবান্
পবন তাহার হরিতে পারে না মান।
রিক্ত যাহারা লঘু বলে লোকে জানে
পূর্ণতা সদা গৌরব বহে আনে।
হরিৎকপিশপুলকিততনু নবকদম্ব ফুলে
হরষিত আঁখি সারঙ্গদল, কদলীভোজন করে,
গ্রহণ করিয়া বসুন্ধরার সিক্ত বনের ঘ্রাণ
ওগো জলধর, তোমার পথের দিবে তারা সন্ধান।
জলবিন্দুর গ্রহণে চতুর চাতকপাখীর দল,
আকাশে উড়িবে বলাকারা চঞ্চল।
বলাকার শ্রেণী গণিবার কালে তব গুরু গরজনে
সিদ্ধাঙ্গনাকম্পিতকায় পতির আলিঙ্গনে।
হেরিবে তোমার শ্যামলকান্তি নন্দিতহরষণে।
আমারই লাগিয়া ক্ষিপ্রগমনে উৎসুক তুমি জানি,
তবু পথে সখা বিলম্ব হবে, মানি।
কূটজকুসুমে সুরভিত পর্বতে
ক্ষণেকের তরে থেকে যেতে তবু হবে।
মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা। কি অসাধারন ছন্দ বন্ধনে ধরেছেন মেঘদূত। বাংলার পদ লালিত্য আবার প্রত্যক্ষ হচ্ছে। দিদিকে নমস্কার।
আপনাদের ভাললাগায় অনুবাদের মূল্য গেল বেড়ে।” শুধু প্রাণধারণের গ্লানি”থেকে মুক্তি
মিলল চিরদিনের জন্য নাহলেও কয়েকদিনের
জন্য তো বটেই।নমস্কার জানাই।